
রাধা হলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রেয়সী। তাঁর রাসমণ্ডলের গোপিনীদের মধ্যে সৰ্বশ্রেষ্ঠ। বঙ্গীয় এবং নদীয়া বৈষ্ণব শাখায় রাধাকেই মূলপ্রকৃতি বলে অভিহিত করা হয়েছে। সংস্কৃত শব্দ রাধার অন্যতম অৰ্থ হ'ল “ভাগ্যবান, সফল”।
রাধিকা বা রাধারাণী হলেন হিন্দু বৈষ্ণবধর্মের একজন বিশিষ্ট দেবী। বৈষ্ণব ভক্তেরা তাঁকে বলেন শ্রীমতী। হিন্দুধর্মের বহু গ্রন্থে বিশেষত শাক্তধর্মে, রাধাকে বৈকুণ্ঠের লক্ষ্মীদেবীর বিস্তার (অবতার) বলা হয়েছে। গৌড়ীয় বৈষ্ণব তত্ত্ববিদ্যা অনুসারে, রাধা হলেন পরম সত্ত্বা শ্রীকৃষ্ণের শাশ্বত সঙ্গী বা তাঁর দিব্যলীলার শক্তি । রাধা ও কৃষ্ণের যুগলমূর্তিকে রাধাকৃষ্ণ রূপে আরাধনা করা হয়। যদিও ভগবানের এই রূপের অনেক প্রাচীর উল্লেখ রয়েছে, কিন্তু দ্বাদশ শতাব্দীতে যখন জয়দেব গোস্বামী সুবিখ্যাত কাব্য গীতগোবিন্দ রচনা করেন, তখন থেকেই দিব্য কৃষ্ণ ও তাঁর ভক্ত রাধার মধ্যেকার আধ্যাত্মিক প্রেমের সম্বন্ধিত বিষয়টি সমগ্র ভারতবর্ষে উদযাপিত হতে শুরু করে।
ভাগবত অনুযায়ী, তিনি হলেন গোকুলনিবাসী বৃষভানু ও কলাবতীর কন্যা। ব্রহ্মবৈবৰ্ত পুরাণ ও দেবীভাগবতের মতে, রাধার সৃষ্টি ভগবান কৃষ্ণের শরীরের বামভাগ থেকে হয় এবং সেই রাধাই দ্বাপর যুগে বৃষভানুর পুত্রী রূপে জন্ম গ্রহণ করেন। রাধা শ্রীকৃষ্ণের সহস্রাধিক গোপিনী প্রেমিকাগণের মধ্যে শিরোমণি। তাঁকে কৃষ্ণলীলার মধ্যে ব্রজে আয়ান (সংস্কৃত: অভিমন্যু) পত্নীর ভূমিকাতেও পাওয়া যায়।
শ্রীকৃষ্ণ এবং রাধার প্রেম বিষয়ক বহু গাঁথা কবিতা বৈষ্ণব পদাবলি সাহিত্যের অন্যতম উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে যা বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য ঐশ্বর্য। শ্রীকৃষ্ণকীর্তনেও রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলা সুবিস্তৃতভাবে বর্ণিত হয়েছে। বাংলার ভক্তি আন্দোলনেও এর সুদুরপ্রসারী প্রভাব পড়েছিল।
0 comments:
Post a Comment